এসএসসিতে দেশের ৯টি’র মধ্যে ৮ বিভাগেই সেরা বগুড়া জিলা স্কুলের সাম্য
হাফিজা বিনা: এবারের এসএসসি পরীক্ষায় দেশের ৯টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের মধ্যে ৮ বোর্ড সেরা হয়েছে বগুড়া জিলা স্কুলের ছাত্র মোঃ সামসাদ মালিক সাম্য। ১৩শ’ নাম্বারের মধ্যে ১২৮৩ পেয়েছে সে। বই খুঁটিয়ে পড়ার অভ্যাস ও তার সাথে নতুন মাত্রা যোগ করা আত্মস্থ করেছিল সে। এছাড়াও হাতের লেখা সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও সময়ের মধ্যে লেখা শেষ করা তার ফলাফলের অন্যতম কারণ।
মোঃ সামসাদ মালিক সাম্য। বাবা বগুড়া জিলা স্কুলের জীব বিজ্ঞানের সিনিয়র শিক্ষক মোঃ আব্দুল মালেক। মা একই স্কুলের বাংলার সিনিয়র শিক্ষক মোছাঃ শাহানাজ বেগম। সাম্য ১ম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত কখনও ১ম ও ২য় ছাড়া কখনও তৃতীয় হয়নি। তারই ধারাবাহিকতায় তার আজকের এই সাফল্য।
অংক,ফিজিক্স, ক্যামেস্ট্রি ও শারীরিক শিক্ষা স্বাস্থ্যও প্রযুক্তি বিষয়ে একশো শতাংশ নম্বর পেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সাম্য। সাম্য জানায়, ভাল ফলাফল করতে গেলে পাঠক্রমে যে বইগুলো রয়েছে সে বিষয় সম্পর্কে ধারণা তৈরি হওয়া প্রয়োজন সবার আগে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ধারণা স্পষ্ট হলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়ার যায়। সেগুলো খুঁটিয়ে পড়েছে সে। ক্লাসের এবং শিক্ষকদের প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিন শেষ করতো। পড়ার জন্য প্রতিদিন নিদিষ্ট করে সময় ছিল না। তবে গড়ে ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা পড়তো সে। পড়ার সময় এবং পরীক্ষার সময় মনোসংযোগ সম্পর্কে সে সচেতন ছিল। টাইম ম্যানেজমেন্টও গুরুত্বপূর্ণ। লেখা সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে। তবেই ভালো রেজাল্ট করা সম্ভব। পড়ালেখার পাশাপাশি সাম্য আঁকতে খুব ভালবাসে। গেম খেলতেও পছন্দ করে । এছাড়াও সাম্য একজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটরও।
আরও পড়ুনমোবাইল ব্যবহারের ব্যাপারে সে জানায়, এখন ডিজিটাল যুগ। মোবাইল ফোন শুধু যে খারাপ তা নয়। এর থেকে ভাল কিছু গ্রহণ করতে হবে। সেও মোবাইল ব্যবহার করেছে স্কুলের বিভিন্ন মেসেজ পাওয়ার জন্য। এছাড়াও পড়ার জন্য কখনও কখনও ইউটিউবের সাহায্য নিতে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে হয়েছে তার।
ইঞ্জিনিয়ার বা অন্যকোন প্রফেশন নয় সাম্য হতে চায় একজন মানবিক ডাক্তার। সে জানায় এইচএসসিতে ভাল রেজাল্ট করার পর মেডিকেল কলেজে ভর্তি হবে এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানে বড় ডিগ্রী নিয়ে দেশ এবং মানুষের সেবা করতে চায়। এজন্য এখন থেকেই সে নিজেকে তৈরি করতে চায়।
বগুড়ার শহরের মালতিনগরে বাড়ি সাম্যদের। শিক্ষক বাবা-মার দুই সন্তানের মধ্যে সাম্য ছোট। বড়ভাই মোঃ শারতাজ মালিক শান্ত আইইউটিতে পড়ালেখা করে। লেখাপড়ায় দুই ভাই খুব মেধাবী। এ সাফল্যের পিছনে বাবা- মা এবং শিক্ষকদের ভূমিকা বেশি বলে মনে করে সাম্য। তার বাবা আব্দুল মালেক এবং মা শাহানাজ বলেন, সাম্য খুব শান্ত এবং লক্ষ্মী স্বভারের । যে কোন সময় তাকে পড়াতে বসলে সে পড়তে বসত। সে যেটা পড়ে মন দিয়েই পড়ে। যে কোনও বিষয় আত্মস্থ করার চেষ্টা করে। তবে অভিভাবক হিসেবে সন্তানকে সময় দিতে হবে। এবং যে অবস্থাতেই থাকি না কেন তার পড়ালেখার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমরাও তাই করেছি। এজন্যই হয়তো সাম্য এত ভাল রেজাল্ট করেছে। সাম্য’র মা আরও জানান, পরীক্ষার পর ভেবেছিলাম সে ভাল করবে। কিন্তু এত ভাল করে স্কুলের এবং বগুড়ার জন্য সন্মান বয়ে আনবে এটা আশা করেননি।
মন্তব্য করুন